.--- layout: page ---
ইস্রায়েলীয়দের উপর অত্যাচার ১ঃ১-২ ইস্রায়েলের, অর্থাৎ যাকোবের সংগে তাঁর যে সব ছেলেরা নিজের নিজের পরিবার নিয়ে মিসর দেশে গিয়েছিলেন তাদের নাম হল রূবেণ, শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ৩-৫ ইষাখর, সবূলূন, বিন্যামীন, দান, নপ্তালি, গাদ ও আশের। তা ছাড়া যোষেফ আগেই মিসরে গিয়েছিলেন। যাকোবের বংশের এই সব লোকেরা সংখ্যায় ছিল মোট সত্তরজন। ৬ পরে যোষেফ, তাঁর ভাইয়েরা এবং তাঁদের সময়কার সবাই মারা গেলেন। ৭ কিন্তু ইস্রায়েলীয়দের বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা কম ছিল না; তারা সংখ্যায় বেড়ে উঠে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল এবং খুব শক্তিশালী হয়ে উঠল, আর তাদের দিয়ে মিসর দেশটা ভরে গেল।
৮ পরে এক সময় মিসর দেশের সমস্ত ক্ষমতা এমন একজন নতুন রাজার হাতে গেল যিনি যোষেফের বিষয় কিছুই জানতেন না । ৯ তিনি তাঁর প্রজাদের বললেন, “দেখ, ইস্রায়েলীয়েরা আমাদের চেয়ে সংখ্যায় এবং শক্তিতে বেড়ে উঠেছে। ১০ তাদের সংখ্যা যেন আর বাড়তে না পারে সেইজন্য এস, আমরা তাদের সংগে কৌশল খাটিয়ে চলি; তা না হলে যুদ্ধের সময়ে তারা হয়তো আমাদের শত্রুদের সংগে হাত মিলিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে এবং পরে দেশ ছেড়ে চলে যাবে।” ১১ তাই কঠিন পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে ইস্রায়েলীয়দের উপর অত্যাচার করবার উদ্দেশ্যে মিসরীয়েরা তাদের উপর সর্দার নিযুক্ত করল। ফরৌণের শস্য মজুদ করবার জন্য ইস্রায়েলীয়েরা পিথোম ও রামিষেষ নামে দু’টা শহর তৈরী করল।
১২ কিন্তু তাদের উপর যতই অত্যাচার করা হল ততই তারা সংখ্যায় বেড়ে গিয়ে দেশের সব দিকে ছড়িয়ে পড়ল। এতে ইস্রায়েলীয়দের দরুন মিসরীয়দের মনে খুব ভয় হল। ১৩ তারা তাদের আরও কঠিন পরিশ্রম করতে বাধ্য করল। ১৪ ক্ষেতের অন্য সব কাজের সংগে তারা তাদের উপর চুনসুরকি আর ইটের কাজের কঠিন পরিশ্রমও চাপিয়ে দিল এবং তাদের জীবন তেতো করে তুলল। এই সব কঠিন কাজ করাতে গিয়ে মিসরীয়েরা তাদের প্রতি খুব নিষ্ঠুর ব্যবহার করত।
ঈশ্বর মোশিকে ডাকলেন- ৩ঃ১ একদিন মোশি তাঁর শ্বশুর যিথ্রোর, অর্থাৎ রূয়েলের ছাগল-ভেড়ার পাল চরাচ্ছিলেন। যিথ্রো ছিলেন মিদিয়নীয়দের একজন পুরোহিত। ছাগল-ভেড়ার পাল চরাতে চরাতে মোশি মরু-এলাকার অন্য ধারে ঈশ্বরের পাহাড় হোরেবের কাছে গিয়ে পৌঁছালেন। ২ সেখানে একটা ঝোপের মাঝখানে জ্বলন্ত আগুনের মধ্য থেকে সদাপ্রভুর দূত তাঁকে দেখা দিলেন। মোশি দেখলেন যে, ঝোপটাতে আগুন জ্বললেও সেটা পুড়ে যাচ্ছে না।
৩ এই ব্যাপার দেখে তিনি মনে মনে বললেন, “আমি এক পাশে গিয়ে এই আশ্চর্য ব্যাপারটা দেখব, দেখব ঝোপটা পুড়ে যাচ্ছে না কেন।” ৪ ঝোপটা দেখবার জন্য মোশি একপাশে যাচ্ছেন দেখে সদাপ্রভু ঈশ্বর ঝোপের মধ্য থেকে ডাকলেন, “মোশি, মোশি।” মোশি বললেন, “এই যে আমি।” ৫ সদাপ্রভু বললেন, “আর কাছে এসো না। তুমি পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে আছ। তোমার পায়ের জুতা খুলে ফেল। ৬ আমি তোমার বাবার ঈশ্বর; আমি অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের ঈশ্বর।” তখন মোশি তাঁর মুখ ঢেকে ফেললেন, কারণ ঈশ্বরের দিকে তাকাতে তাঁর ভয় হল।
৭ সদাপ্রভু বললেন, “মিসর দেশে আমার লোকদের উপরে যে অত্যাচার হচ্ছে তা আমার নজর এড়ায় নি। মিসরীয় সর্দারদের অত্যাচারে ইস্রায়েলীয়েরা যে হাহাকার করছে তা আমি শুনেছি। তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা আমি জানি। ৮ মিসরীয়দের হাত থেকে তাদের রক্ষা করবার জন্য আমি নেমে এসেছি। আমি তাদের সেই দেশ থেকে বের করে কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের দেশে নিয়ে যাব। দেশটা বেশ বড় এবং সুন্দর; সেখানে দুধ, মধু আর কোন কিছুর অভাব নেই। ৯ ইস্রায়েলীয়দের কান্না এখন আমার কাছে এসে পৌঁছেছে। মিসরীয়েরা কিভাবে তাদের উপর অত্যাচার করছে তা-ও আমি দেখেছি।
১০ কাজেই তুমি এখন যাও। আমি তোমাকে ফরৌণের কাছে পাঠাচ্ছি। তুমি গিয়ে আমার লোকদের, অর্থাৎ ইস্রায়েলীয়দের মিসর থেকে বের করে আনবে।” ১১ কিন্তু মোশি ঈশ্বরকে বললেন, “আমি এমন কেউ নই যে, ফরৌণের কাছে গিয়ে মিসর থেকে ইস্রায়েলীয়দের বের করে আনতে পারি।” ১২ ঈশ্বর বললেন, “আমিই তোমার সংগে থাকব। তুমি মিসর থেকে লোকদের বের করে আনবে আর তোমরা এই পাহাড়েই আমার উপাসনা করবে।
আমিই যে তোমাকে পাঠালাম এটাই হবে তোমার কাছে তার চিহ্ন।” ১৩ তখন মোশি ঈশ্বরকে বললেন, “কিন্তু আমি গিয়ে ইস্রায়েলীয়দের যখন বলব তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরই আমাকে তাদের কাছে পাঠিয়েছেন, তখন তারা হয়তো আমাকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘তাঁর নাম কি?’ সেই সময়ে আমি তাদের কি উত্তর দেব? ” ১৪ ঈশ্বর মোশিকে বললেন, “যিনি ‘আমি আছি’ আমিই তিনি। তুমি ইস্রায়েলীয়দের বলবে যে, ‘আমি আছি’ তাদের কাছে তোমাকে পাঠিয়েছেন।
আজকের পাঠ শেষ হলে পর নিচের বোতামটিতে ক্লিক করুন
আমার পাঠ করা শেষ হয়েছে