.--- layout: page ---
১৬ তখন পীলাত যীশুকে ক্রুশে দেবার জন্য তাঁদের হাতে দিয়ে দিলেন। ক্রুশে প্রভু যীশুর মৃত্যু তখন সৈন্যেরা যীশুকে নিয়ে গেল। ১৭ যীশু নিজের ক্রুশ নিজে বয়ে নিয়ে মাথার খুলির স্থান নামে একটা জায়গায় গেলেন। সেই জায়গার ইব্রীয় নাম ছিল গল্গথা। ১৮ সেখানে তারা যীশুকে ক্রুশে দিল-যীশুকে মাঝখানে আর তাঁর দু’পাশে অন্য দু’জনকে দিল। ১৯ পীলাত একটা দোষনামা লিখে যীশুর ক্রুশের উপরে লাগিয়ে দিলেন। তাতে লেখা ছিল, “নাসরতের যীশু, যিহূদীদের রাজা।” ২০ যেখানে যীশুকে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল সেই জায়গাটা শহরের কাছে ছিল বলে যিহূদীদের অনেকেই সেই দোষনামা পড়ল। সেটা ইব্রীয়, রোমীয় আর গ্রীক ভাষায় লেখা ছিল।
২১ তখন যিহূদীদের প্রধান পুরোহিতেরা পীলাতকে বললেন, “ ‘যিহূদীদের রাজা,’ এই কথা লিখবেন না, বরং লিখুন, ‘এ বলত, আমি যিহূদীদের রাজা।’ ” ২২ পীলাত বললেন, “আমি যা লিখেছি তা লিখেছি।” ২৩ যীশুকে ক্রুশে দেবার পর সৈন্যেরা তাঁর কাপড়-চোপড় নিয়ে নিজেদের মধ্যে চার ভাগে ভাগ করল। পরে তারা যীশুর জামাটাও নিল। সেই জামায় কোন সেলাই ছিল না, উপর থেকে নীচ পর্যন্ত সবটাই বোনা ছিল। ২৪ তা দেখে সৈন্যেরা একে অন্যকে বলল, “এটা না ছিঁড়ে বরং গুলিবাঁট করে দেখি এটা কার হবে।” এটা ঘটেছিল যাতে পবিত্র শাস্ত্রের এই কথা পূর্ণ হয়, তারা নিজেদের মধ্যে আমার কাপড়-চোপড় ভাগ করছে, আর আমার কাপড়ের জন্য তারা গুলিবাঁট করছে।
আর সত্যিই সৈন্যেরা এই সব করেছিল। ২৫ যীশুর মা, তাঁর মায়ের বোন, ক্লোপার স্ত্রী মরিয়ম আর মগ্দলীনী মরিয়ম যীশুর ক্রুশের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ২৬ যীশু তাঁর মাকে এবং যে শিষ্যকে ভালবাসতেন তাঁকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন। প্রথমে তিনি মাকে বললেন, “ঐ দেখ, তোমার ছেলে।” ২৭ তার পরে সেই শিষ্যকে বললেন, “ঐ দেখ, তোমার মা।” তখন থেকেই সেই শিষ্য যীশুর মাকে তাঁর নিজের ঘরে নিয়ে গেলেন। ২৮ এর পরে সব কিছু শেষ হয়েছে জেনে পবিত্র শাস্ত্রের কথা যাতে পূর্ণ হয় সেইজন্য যীশু বললেন, “আমার পিপাসা পেয়েছে।”
২৯ সেই জায়গায় সির্কায় পূর্ণ একটা পাত্র ছিল। তখন তারা একটা স্পঞ্জ সেই সির্কায় ভিজাল এবং এসোব গাছের ডালের মাথায় তা লাগিয়ে যীশুর মুখের কাছে ধরল। ৩০ যীশু সেই সির্কা খাওয়ার পরে বললেন, “শেষ হয়েছে।” তারপর তিনি মাথা নীচু করে তাঁর আত্মা সমর্পণ করলেন। ৩১ সেই দিনটা ছিল পর্বের আয়োজনের দিন। পরের দিন ছিল বিশ্রামবার, আর সেই বিশ্রামবারটা একটা বিশেষ দিন ছিল বলে যিহূদী নেতারা চেয়েছিলেন যেন সেই দিনে দেহগুলো ক্রুশের উপরে না থাকে। এইজন্য তাঁরা পীলাতের কাছে অনুরোধ করলেন যেন ক্রুশে যারা আছে তাদের পা ভেংগে ক্রুশ থেকে তাদের সরিয়ে ফেলা হয়।”
৩২ তখন সৈন্যেরা এসে যীশুর সংগে যাদের ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল তাদের দু’জনের পা ভেংগে দিল। ৩৩ পরে যীশুর কাছে এসে সৈন্যেরা তাঁকে মৃত দেখে তাঁর পা ভাংল না। ৩৪ কিন্তু একজন সৈন্য তাঁর পাঁজরে বর্শা দিয়ে খোঁচা মারল, আর তখনই সেখান থেকে রক্ত আর জল বের হয়ে আসল। ৩৫ যিনি নিজের চোখে এটা দেখেছিলেন তিনিই সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন, আর তাঁর সাক্ষ্য সত্যি। তিনি জানেন যে, তিনি যা বলছেন তা সত্যি, যেন তোমরাও বিশ্বাস করতে পার। ৩৬ এই সব ঘটেছিল যাতে পবিত্র শাস্ত্রের এই কথা পূর্ণ হয়, “তাঁর একখানা হাড়ও ভাংগা হবে না।” ৩৭ আবার শাস্ত্রের আর একটা কথা এই-“যাঁকে তারা বিঁধেছে তাঁর দিকে তারা তাকিয়ে দেখবে।”
প্রভু যীশুর কবর ৩৮ এই সমস্ত ঘটনার পরে অরিমাথিয়া গ্রামের যোষেফ যীশুর দেহটা নিয়ে যাবার জন্য পীলাতের কাছে অনুমতি চাইলেন। যোষেফ ছিলেন যীশুর গুপ্ত শিষ্য, কারণ তিনি যিহূদী নেতাদের ভয় করতেন। পীলাত অনুমতি দিলে পর তিনি এসে যীশুর দেহ নিয়ে গেলেন। ৩৯ আগে যিনি রাতের বেলায় যীশুর কাছে এসেছিলেন সেই নীকদীমও প্রায় তেত্রিশ কেজি গন্ধরস ও অগুরু মিশিয়ে নিয়ে আসলেন। ৪০ পরে তাঁরা যীশুর দেহটি নিয়ে যিহূদীদের কবর দেবার নিয়ম মত সেই সমস্ত সুগন্ধি জিনিসের সংগে দেহটি কাপড় দিয়ে জড়ালেন।
৪১ যীশুকে যেখানে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল সেই জায়গায় একটা বাগান ছিল আর সেখানে একটা নতুন কবর ছিল। সেই কবরের মধ্যে কাউকে কখনও রাখা হয় নি। ৪২ সেই দিনটা ছিল যিহূদীদের পর্বের আয়োজনের দিন, আর কবরটাও কাছে ছিল বলে তাঁরা যীশুকে সেই কবরেই রাখলেন।
আজকের পাঠ শেষ হলে পর নিচের বোতামটিতে ক্লিক করুন
আমার পাঠ করা শেষ হয়েছে